হঠাৎ নেমে আসা বৃষ্টিতে ভিজে প্রায়ই সর্দি-কাশিতে ভোগেন অনেকে। আবার কেউ কেউ ভোগেন জ্বরে। দ্রুত জ্বর থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই হাত বাড়ান ওষুধের দিকে। কিন্তু তা যুক্তিযুক্ত সে বিষয়ে কি আপনি জানেন?
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এই সময়ের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. অরিন্দম বিশ্বাস।
জ্বর হলে ওষুধ খাওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত এমন প্রশ্নে ডা: অরিন্দম বলেন,জ্বরের কারণ মূলত বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস। তাই এক্ষেত্রে মহৌষধের মতো কাজ করে প্যারাসিটামল। জ্বর আসলে তাই প্রথমে বাড়িতে প্যারাসিটামল দিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে পারেন।
ডা: অরিন্দম আরও বলেন,যদি অ্যালার্জির সমস্যা থাকে তাহলে অ্যালার্জির ওষুধও খাওয়া যাবে বলে মনে করেন তিনি। কিন্তু কখনই দ্রুত জ্বর থেকে মুক্তির জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়া যাবে না বলে পরামর্শ তার।
অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রসঙ্গে ডা: অরিন্দম বলেন,ভাইরাসজনিত জ্বরে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ শরীরে ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ব ধ্বংস করে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনই নিজে নিজে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাবেন না।
জ্বরের ক্ষতিকর লক্ষণ যেমন বমি, পায়খানা, হাত-পা অবশ বা ব্যথা অনুভব হওয়া, শরীর ভীষণ দুর্বল অনুভব হলে সেক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকরে পরামর্শ উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
জ্বর অবস্থায় রোগীকে কী খাবার খাওয়ানো উচিত, এমন দ্বিধাদ্বন্দ্বেও ভুগতে দেখা যায় অনেককে। এ প্রসঙ্গে ডায়েট লিস্টে বেশি ডা. অরিন্দম প্রাধান্য দিতে বলছেন উচ্চ ক্যালোরি ও ভিটামিনযুক্ত খাবার। মুখে রুচি ফিরিয়ে আনে এবং সহজে হজম হয় এমন খাবারেও প্রাধান্য দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
আসুন এক নজরে দেখে নিই, জ্বরের রোগীর সঠিক ডায়েটপ্ল্যান।
১। তরল খাবার: জ্বরের রোগীর শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে তরল খাবার খেতে দিতে হবে। এরজন্য ফলের রস, স্যুপ, ডাবের পানি পান করতে দিন রোগীকে।
২। সবজি ও ফলমূল: রোগীর শরীরে ভিটামিনের চাহিদা পূরণে ডায়েটে রঙিন সবজি ও ফলমূলের পরিমাণ বাড়ান।
৩। সহজে হজম হয় এমন খাবার: এর জন্য রোগীকে খেতে দিতে পারেন খিচুড়ি, দই, ভাত, সেদ্ধ আলু, সেদ্ধ ডিম, সেদ্ধ শাকসবজি, জাউ ভাত ও পেঁপে-মুরগির ঝোল ইত্যাদি।
৪। স্যালাইন: শরীর বেশি দুর্বল থাকলে ৫০০ মিলি পানিতে ওরস্যালাইন গুলিয়ে একটু একটু করে রোগীকে খাওয়ান।
৫। স্বাভাবিক খাবার: রোগ নিরাময়ের দিকে এগুতে থাকলে রোগীকে আবার সাধারণ খাবারের অভ্যাসে আনা যেতে পারে।
তবে মনে রাখবেন, জ্বরের সময় সঠিক ডায়েটের পাশাপাশি রোগীকে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। সেই সঙ্গে কখনোই রোগীকে বাইরের খাবার, তৈলাক্ত খাবার, ভাজাপোড়া, কোমলপানীয়ের মতো খাবার খাওয়ানো যাবে না।
Discussion about this post