নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:
নিজ এলাকার মানুষের বিরুদ্ধে মামলা করে তাদের চরম হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে এসকেন্দার মির্জা নামের এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে। তিনি অন্যের জমির জাল দলিল তৈরি করা সহ অর্থ আত্মসাৎ করে থাকেন, আবার তাদের বিরুদ্ধেই উল্টো মামলা ঠুকে দেন আদালতে। বছরের পর বছর হয়রানির শিকার হচ্ছেন বহু মানুষ। ফতুল্লার রামারবাগ এলাকার মামলাবাজ নামে খ্যাত এসকেন্দার মির্জার কারণে আতঙ্কে রয়েছে এলাকাবাসী। তার মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ থেকে রেহাই পায়নি তার শ্বশুর সহ এলাকায় বসবাসকারী অনেক মানুষ।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে আল-আমিন নামের এক ব্যক্তি দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় এসকেন্দার মির্জার মিথ্যা মামলার শিকার হন বলে অভিযোগ করেন। ভুক্তভোগী আল-আমিনকে মামলা দিয়ে ক্ষান্ত হননি, গত সোমবার (৩ জুন) তাকে আবার মামলা সহ জীবন নাশের হুমকি প্রদান করেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে ভুক্তভোগী আল-আমিন বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ফতুল্লার রামারবাগ এলাকার হাজী আঃ সাত্তারের ছেলে মামলাবাজ মোঃ এসকেন্দার মির্জা তার বসত বাড়ির আসে পাশের আত্মীয়, প্রতিবেশীর নামে থানায়, কোর্টে প্রায় এক ডজন মামলা ও অভিযোগ দিয়ে দীর্ঘদিন থেকে হয়রানি করে আসছেন। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি যে কারও বিরুদ্ধে মামলা টুকে দেন। সার্বক্ষণিক তার মামলার আতঙ্কে থাকেন এলাকাবাসী।
অভিযোগের বরাত দিয়ে আল-আমিন জানান, এসকেন্দার মির্জা একজন মামলাবাজ ও খারাপ প্রকৃতির লোক। সে আমার কাছে টাকা পাবে বলে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বিগত ২০২১ সালের ১৭ আগস্ট তারিখে বিজ্ঞ আদালত, নারায়ণগঞ্জে আমার বিরুদ্ধে সি.আর মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং- ৫৮৩/২০২১। এসকেন্দার মির্জা আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পর তার দাবীকৃত টাকা তাকে প্রদান করে তার সাথে আপোষ হওয়ার জন্য বলে। আমি তাকে টাকা দিতে অস্বীকার করায় এবং আমাকে অযথা হয়রানী করতে নিষেধ করলে সে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এবং আমাকে বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি ও জীবন নাশের হুমকি প্রদান করে। অতঃপর আমি তার দায়েরকৃত মামলা হতে খারিজ হই। তাতে সে আমার উপর আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এবং বিভিন্ন সময় আমাকে রাস্তা-ঘাটে, বাসা-বাড়িতে এসে হুমকি-ধামকি দেওয়া সহ টাকা পয়সা দাবি দাওয়া করে আসছে। একপর্যায়ে সে আমার বিরুদ্ধে পূনরায় মোকামঃ বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ২নং আদালত, নারায়ণগঞ্জে সি.আর মামলা নং- ৯০৫/২০২৩ দায়ের করে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি যে, এসকেন্দার মির্জা আমি সহ এলাকার আরও বিভিন্ন অসহায় লোকজনের কাছে থেকে টাকা পয়সা, জায়গা-সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে একাধিক মামলাও করেছে। এযাবৎকাল সে আমাকে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে।
আল-আমিন আরও জানান, এসকেন্দার মির্জা বিভিন্ন সময় নিজেকে পুলিশ, ডিবি, সেনাবাহিনীর মেজর ও সাংবাদিকও পরিচয় দিয়ে থাকে। এমতাবস্থায় গত ৩ জুন বেলা ১২টার সময় এসকেন্দার মির্জা আমাকে নারায়ণগঞ্জ নতুন কোর্টের সামনে পেয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতঃ মারধর করতে উদ্যত হয়। একপর্যায়ে সে আমাকে বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি ও জীবন নাশের হুমকি প্রদান করে এবং আরও বলে যে, তুই যদি আমার দাবিকৃত টাকা না দিস কিংবা এই বিষয়ে কোন প্রকার বাড়াবাড়ি করিস তাহলে তোকে জীবনের তরে শেষ করে ফেলবো নতুবা আরও যেকোন মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিব মর্মে হুমকি প্রদান করে। সে এরূপকার্যকলাপ করিয়া আমাকে হয়রানী করতেছে। এসকেন্দার মির্জা যেকোন সময় আমার আরও বড় ধরনের ক্ষতিসাধন করতে পারে বলে আমার আশঙ্কা হচ্ছে। এ বিষয়ে আমি পুলিশ ও র্যাবের উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আবু হানিফ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Discussion about this post