জামালপুর প্রতিনিধিঃ
জামালপুর পৌর শহরের রশিদপুর এলাকায় অবস্থিত ইজ্জাতুননেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও। প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতি, অসহযোগিতা ও স্বেচ্ছাচারিতায় নির্বাচন বন্ধ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সকাল ১০ টায় নির্বাচন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই তালাবদ্ধ ছিলো বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষ। উপস্থিত ছিলেন না প্রধান শিক্ষক মোঃ আনিছুজ্জামান।
সভাপতি প্রার্থী শাহীনুর রহমান শাহীন সাংবাদিকদের অভিযোগ করে জানান, আজ ১৬ জুন সকাল ১০ টায় ইজ্জাতুননেছা উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। সে লক্ষ্যে দুটি প্যানেল ভোটারদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ, ভোট প্রার্থনা শেষ করেছেন। নির্বাচনে ভোট দিতে ভোটাররা স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়েছিলেন। সকাল ১০ টায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই বিদ্যালয়ের অফিস ও নির্বাচন কক্ষ তালাবদ্ধ করে প্রধান শিক্ষক আনিছুজ্জামান অনুপস্থিত ছিলেন। বার বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন কল রিসিভড করেন নি। অপরদিকে পরে একবার কল রিসিভড করে জানান, “আদালতের নিষেধাজ্ঞা আছে। আদালতের আদেশ নিয়ে আমি আসতেছি। একটা প্যানেলের পক্ষে সরাসরি প্রধান শিক্ষক আনিছুজ্জামান ভোট চাওয়া,ভোটদানে বাধা প্রধান ও স্বেচ্ছাচারিতায় লিপ্ত ছিলেন। প্রধান শিক্ষকের জন্য সকাল থেকে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয় নি। পরে ১.১৩ মিনিট পর সকাল ১১.১৩ মিনিটে পিয়ন এর মাধ্যমে নির্বাচন স্থগিতাদেশের একটি কপি নিয়ে আসলে। নির্বাচন বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়।
রশিদপুর এলাকার ভোটার জুয়েল শেখ জানান, প্রধান শিক্ষক আনিছুজ্জামান একজন দুর্নীতিপরায়ণ মানুষ। এই বিদ্যালয়ের উন্নয়ন তিনি কখনোও চান নি। নিজের পদ আর চেয়ার দখলে তিনি মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ইজ্জাতুননেছা উচ্চ বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের উন্নতিতে তার সহ্য হয় না। বিদ্যালয়ের নির্বাচনের দিনে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। উনার জন্যই নির্বাচন বন্ধ হয়ে গেছে।
আরেক ভোটার মোঃ ওবায়দুল্লাহ জানান, অনেক কাজ রেখে ভোট দিতে আসছি। এসে দেখি সব তালা লাগানো। প্রধান শিক্ষক আনিছুজ্জামান অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথেও যা তা আচরণ করেন। শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন। প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে তাকে বহিষ্কার এর দাবী জানান তিনি।
ইজ্জাতুননেছা উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার ও উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার শফিকুল হায়দার জানান, নির্বাচন শুরু হওয়ার কথা সকাল ১০ টায়। একজন শিক্ষক ছাড়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহ সকলেই অনুপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘ ১ ঘন্টা ১৩ মিনিট বিদ্যালয়ের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকার পর বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের একটি কপি দেওয়া হয়। যেখানে আদালত থেকে নির্বাচন স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে পরবর্তী আদেশ পাওয়ার আগ পর্যন্ত ইজ্জাতুননেছা উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন বন্ধ থাকবে।
ইজ্জাতুননেছা উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার ও উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার শফিকুল হায়দার আরও জানান, প্রধান শিক্ষক মোঃ আনিছুজ্জামান পদাধিকারবলে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে অসহযোগিতা করেছেন। তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ সহ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷
এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও প্রধান শিক্ষক মোঃ আনিছুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, আমি রাতেই আদালতের চিঠি পেয়েছি নির্বাচন স্থগিত। আমি এখনো আদালতে আছি৷ গতকাল থেকেই নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও প্রোপাগান্ডা চালিয়ে অভিভাবকদের বিদ্যালয়ে উপস্থিত করানো হচ্ছে৷ নির্বাচন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা যদি আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও আমার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয়,তাহলে দিতে পারে।
Discussion about this post